Skip to content Skip to sidebar Skip to footer

রানী দুর্গাবতী ও তাঁর শাসন কার্যাবলী:


মধ্যযুগে ভারতবর্ষের ইতিহাসে গন্ডোয়ানা রাজ্যের রানী দুর্গাবতী ছিলেন একজন বীরাঙ্গনা ও অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। চান্দেল্ল বংশীয় রাজপুত শাসক ও কালিঞ্জর দুর্গের রাজা কিরাত রাই-এর পরিবারে ১৫২৪ খ্রিস্টাব্দে রানি দুর্গাবতীর জন্ম হয়। ১৫৪২ খ্রিস্টাব্দে গন্ডোয়ানা বা গড়কাটাঙ্গার রাজা সংগ্রাম শাহের জ্যেষ্ঠ পুত্র দলপৎ শাহের সঙ্গে দুর্গাবতীর বিবাহ হয়। ১৫৪৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁদের পুত্র বীরনারায়ণ জন্মগ্রহণ করে।

রানী দুর্গাবতীর শাসনভার গ্রহণ:
১৫৫০ খ্রিস্টাব্দে গন্ডোয়ানার শাসক দলপৎ শাহের অকালমৃত্যু হলে রানি দুর্গাবতী পাঁচ বছরের নাবালক পুত্র বীরনারায়ণকে সিংহাসনে বসিয়ে অভিভাবিকা হিসেবে শাসনকার্যপরিচালনার দায়িত্বভার নিজ হাতে তুলে নেন। তিনি মধ্যপ্রদেশের পাঁচমারির কাছে প্রায় ২৫০ মাইল দূরে তাঁর রাজধানী সিংহাউগড় থেকে সাতপুরা পর্বতমালার চৌরাগড়ে স্থানান্তরিত করেন। এ ছাড়া তিনি একটি শক্তিশালী সেনাবাহিনীও গঠন করেছিলেন।

মালব-গন্ডোয়ানা সংঘর্ষ:
১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে মালবের রাজা বাজ বাহাদুর গন্ডোয়ানা আক্রমণ করলে রানি দুর্গাবতী বীরদর্পে যুদ্ধ করে সাফল্যের সঙ্গে সেই আক্রমণ প্রতিহত করেন। দুর্গাবতীর কাছে পরাস্ত মালবরাজ পুনরায় আর কখনও গন্ডোয়ানা রাজ্য আক্রমণের সাহস দেখাননি।

গন্ডোয়ানাতে মুঘল আক্রমণের দুর্গাবতীর প্রতিরোধ সংগ্রাম:
১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট আকবর নিজ হাতে শাসনক্ষমতা গ্রহণের পরেই গন্ডোয়ানা জয়ে উদ্যোগী হন। আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সুসজ্জিত মুঘলবাহিনীর বিরুদ্ধে রানী দুর্গাবতী বীরবিক্রমে যুদ্ধ করতে থাকেন। নররাই-এর যুদ্ধে মুঘল সেনাপতি আসফ খাঁর আক্রমণে রানি দুর্গাবতীর সেনাপতি অর্জুন দাম নিহত হলে তিনি নিজে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে মুঘলবাহিনীকে পিছু হঠতে বাধ্য করেন।

পরাজয় ও আত্মাহুতি:
মুঘল সেনাপতি আসফ খাঁ রানী দুর্গাবতীর শিবির আক্রমণ করলে দুর্গাবতী দারুণভাবে আহত ও বিপর্যস্ত হন। এমতাবস্থায় শত্রুপক্ষের কাছে নতি স্বীকার করার চেয়ে তিনি মৃত্যুকে অনেক বেশি গৌরবের বলে মনে করেন এবং ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ২৪ জুন ছুরিকাঘাতে রানী দুর্গাবতী আত্মহত্যা করেন। 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন for "রানী দুর্গাবতী ও তাঁর শাসন কার্যাবলী:"